সোমবার, ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

spot_img
spot_img

বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে

বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের উচ্চ পরযায়ে  সংস্কারের মানসিকতা চলে এসেছে। তবে এ বোধদয় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে না পারলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাদের মাধ্যমেই নীতিগুলো বস্তবায়ন হয়ে থাকে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগের গতিপ্রবাহে কোভিড-১৯ এর প্রভাব : সমস্যা ও উত্তরণ’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী বছরের মধ্যে ব্যবসা পরিচালনার বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ দুই অংকের ঘরে চলে আসবে। তিনি জানান, খুব শীঘ্রই খেলাপী আইন ও কোম্পানী আইনে প্রয়োজনীয় সংষ্কার আনা হবে। এছাড়াও অন্যান্য দেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর কাঠামাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

আলোচনার স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালে বৈশ্বিক বিনিয়োগ ৪০% কমে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের এসে দাঁড়াতে পারে। যার ফলে আমাদের মত উন্নয়নীল দেশে কোভিড পরবর্তী সময়ে বৈদেশিক বিনিয়োগ উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমে যেতে পারে।

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে পলিসি এক্সচেঞ্জ-এর চেয়ারম্যান ড. এম. মাশরুর রিয়াজ বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে নতুন পণ্য উৎপাদন, উদ্ভাবন, অবকাঠামো, বাজার ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

এছাড়াও তিনি, প্রত্যাশিত বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষনে কমপ্লায়েন্স, দক্ষ মানবসম্পদ, পণ্য পরিবহনে সহজতর প্রক্রিয়া, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নীতিমালা সমূহের মধ্যে সমন্বয় এবং দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতে বিনিয়োগ করলে উদ্যোক্তারা ২০% নগদ সহায়তা  পাবে। তিনি বেজা, বিডা এবং হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের আরো ক্ষমতায়নের আহবান জানান। এছাড়াও নীতিমালার সংষ্কার এবং বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি বলেন, জাপানী বিনিয়োগকারীর বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর ভিত্তিক অর্থনীতি এবং এশিয়া অঞ্চলে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনে জাপানের পক্ষ হতে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে করকাঠামো, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স এবং ফরেন এক্সচেঞ্জ নীতিমালা সংস্কার অতীব গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন। বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ব্যবসা পরিচালনায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলেই বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষন করা সম্ভব বলে তার অভিমত।

স্যামসং-ফেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আলম আল মাহবুব বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য দ্রুত সময়ে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সুবিধা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী। আব্দুল মোনেম লিমিটেড-এর উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম মহিউদ্দিন মোনেম বলেন, ভূমি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা অত্যন্ত প্রকট এবং এ সমস্যার আশু সমাধান প্রয়োজন।

আমেরিকা-বাংলাদেশ চেম্বারের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর পক্ষ হতে হয়রানি মুক্ত সেবা নিশ্চিতকরণের আহবান জানান এবং কাস্টমস আইন ও খেলাপী আইনের যুগোপযোগীকরণের উপর জোরারোপ করেন।

বিল্ড-এর চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে স্বাস্থ্যখাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষনে আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। বিল্ড এর সাবেক চেয়ারম্যান  ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ-এর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম জানান, দেশের পুঁজিবাজারে বৈদেশিক বিনিয়োগের সংখ্যা বেশ আশাব্যঞ্জক।

মুক্ত আলোচনায় ঢাকা চেম্বারের প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ও পরিচালক ওয়াকার আহমদ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, এফসিএ, এফসিএস ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

মন্তব্য করুন:

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বাধিক পঠিত