দেশে আমি যা উপার্জন করি তা দিয়ে ভালো মত জীবন চালাতে পারি না। বিদেশে গিয়ে অনেকেই ভালো করছে, তাই আমিও বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদেশগামী একজন তরুণের এমন বক্তব্য দিলেও তার মতের বিপরীতের অবস্থান বাকি সকলের।
অর্থাৎ বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ১০০ তরুণের মধ্যে ৯৯ জনই দেশে থাকতে চান। যদি কিনা তাদের জন্য ভালো কাজের সুযোগ দেয়া হয়। এসব তরুণদের মধ্যে আবার অর্ধেকের অভিমত, উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেলে তারা বিদেশ যেতে চান না।।
বিদেশ যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমন ১১ হাজার ৪১৫ জন তরুণের সাক্ষাৎকার ভিত্তিক প্রতিবেদনে এই অভিমত পেয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। চলতি বছরের জুনে এসব তরুণদের বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল।
সরকারের সাথে যৌথভাবে ‘বাংলাদেশ: সার্ভে ওন ড্রাইভারস্ অফ মাইগ্রেশন এন্ড মাইগ্রেন্টস্ প্রোফাইল’নামের প্রতিবেদনটি বুধবার একটি অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ করে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা, আইওএম।
প্রতিবেদনে বলা হয়,পাঁচটি প্রধান কারণে বাংলাদেশের মানুষ বিদেশ যেতে চায়। জীবিকার অভাব (বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে), অপর্যাপ্ত উপার্জন, অর্থনৈতিক সমস্যা, সামাজিক সেবার অভাব এবং সীমিত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা।
এছাড়া বিদেশগামী ইচ্ছুকদের মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ এবং তারা উচ্চ শিক্ষিত নন। গবেষণার জন্য সাক্ষাৎকারে অংশ নেয়াদের মধ্যে গড় বয়স ২৭ বছ। তাদের মধ্যে ৪১ ভাগ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা সম্পন্ন করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক ২৭ শতাংশ, প্রাথমিক ২৬ শতাংশ এবং শিক্ষা নেই ৩ শতাংশের।
নিয়মিত অভিবাসন প্রত্যাশীদের গড়ে প্রায় ২.৫ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অভিবাসনের জন্য সর্বোচ্চ ১৬ লাখ টাকা খরচের প্রমাণও উঠে আসে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৬ষ্ঠ বৃহত্তম উৎস দেশ। ২০১৯ পর্যন্ত ৭৮ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে অবস্থান করেছেন। প্রতি বছর এদেশে ২২ লাখেরও বেশি তরুণ জনগোষ্ঠী শ্রম শক্তিতে যুক্ত হয়। কিন্তু সেই অনুযায়ী কাজের সুযোগ তৈরি হয় না।